‘মৃত্যুর পর নাম তালিকায় আসতে পারে’

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৭, ২০১৬ সময়ঃ ৩:৩৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৪৪ অপরাহ্ণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

Presentation1‘১৯৭১ এ জীবন বাজি রেখে বাংলার স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। বয়স প্রায় ৮০-৮২, এখনও তালিকায় নাম লেখাতে পারিনি। অনেকের কাছে ধর্না ধরেছি। কোন কাজে আসে না। মনে হয় মৃত্যুর পর নাম তালিকায় আসতে পারে’। এমন বাক্যেই নিজের অপ্রাপ্তির কথা বলছিলেন একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন।

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও কোনও স্বীকৃতি পাননি তিনি । দেশের জন্য যে যোদ্ধা নিজের জীবনকে বাজি রেখেছিলেন তার ঠাঁই মিলেছে এখন ঢাকার মিরপুর বস্তিতে। ছেলে-মেয়েদের গার্মেন্টেসের আয়ের অর্থ দিয়ে কোনমতে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে এই বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা ।

জানা যায়, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের আদম আলী হাওলাদারের ছেলে আমির হোসেন ১৯৭১ সালে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। তিনি নবম সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) জিয়া উদ্দিনের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে প্রায় ১৫ বছর ঘুরেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় স্বীকৃতি মেলেনি তার নাম। বাম পায়ে ঘাতকের বুলেটের আঘাত নিয়ে ৪৫ বছর পর এখনও তিনি স্বীকৃতি পেতে চান।

আমির হোসেন বলেন, অভাব অনটনের কারনে, ‘ঢাকা মিরপুরের উত্তর কালশিরা বস্তিতে বুড়া-বুড়ি কোন মতে বেচে আছি। দেশ স্বাধীনের সাথে শরীক হলেও চার মেয়ে তিন ছেলে কে ভালো ভাবে মানুষ করতে পারিনি। তারা কি আয় করবে আর আমাকে কতদিন খাওয়াবে জানিনা। যুদ্ধে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছে । আজও চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হওয়ায় ভালো চিকিৎসা নিতে পারিনি।  সরকারের কাছে আমার শেষ চাওয়া যদি আমার নামটি তালিকায় আসে তাহলে হয়তো মাসে মাসে কিছু টাকা পেতাম’।

আমির হোসেনের ছেলে হারুন বলেন, বৃদ্ধ বয়সে বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে কিনা জানিনা। তার স্বপ্ন যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এই বাংলায় গর্বের সাথে পরিচয় দিতে পারবো।

হারুন আরও বলেন, ‘বৃদ্ধ বাবার মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতির জন্য নবম সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) জিয়া উদ্দিনের প্রত্যয়নপত্র সহ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ১৯৯৬ সাল থেকে ঘুরেও কোন ফল পাইনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুতি, যাতে বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া হয়’।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/জেডএমলি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G